Book Author | |
---|---|
Publication | |
About Author | বাংলা সাহিত্যের এক কিংবদন্তী হুমায়ূন আহমেদ. বিংশ শতাব্দীর বাঙালি লেখকদের মধ্যে তিনি অন্যতম স্থান দখল করে আছেন. একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও নাট্যকার এ মানুষটিকে বলা হয় বাংলা সায়েন্স ফিকশনের পথিকৃৎ. নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও তিনি বেশ সমাদৃত. বাদ যায়নি গীতিকার কিংবা চিত্রশিল্পীর পরিচয়ও. সৃজনশীলতার প্রতিটি শাখায় তাঁর সমান বিচরণ ছিল. অর্জন করেছেন সর্বোচ্চ সফলতা এবং তুমুল জনপ্রিয়তা. স্বাধীনতা পরবর্তী বাঙালি জাতিকে হুমায়ুন আহমেদ উপহার দিয়েছেন তাঁর অসামান্য বই, নাটক এবং চলচ্চিত্র. চলচ্চিত্রের বদৌলতে মানুষকে করেছেন হলমুখী, তৈরি করে গেছেন বিশাল পাঠকশ্রেণীও. তাঁর নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমনি’ দেখতে দর্শকের ঢল নামে. এছাড়া শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, ঘেটুপুত্র কমলা প্রভৃতি চলচ্চিত্র সুধীজনের প্রশংসা পেয়েছে. অনন্য কীর্তি হিসেবে আছে তাঁর নাটকগুলো. এইসব দিনরাত্র, বহুব্রীহি, আজ রবিবার, কোথাও কেউ নেই, অয়োময়ো আজও নিন্দিত দর্শকমনে. হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের জনক তিনি. রচনা করেছেন নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, জোছনা ও জননীর গল্পের মতো সব মাস্টারপিস. শিশুতোষ গ্রন্থ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রচনা, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী মিলিয়ে হুমায়ূন আহমেদ এর বই সমূহ এর পাঠক সারাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে. হুমায়ূন আহমেদ এর বই সমগ্র পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিতও হয়েছে. সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জন করেছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), একুশে পদক (১৯৯৪), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), মাইকেল মধুসূধন দত্ত পুরস্কার (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮), শিশু একাডেমি পুরস্কার, জয়নুল আবেদীন স্বর্ণপদকসহ নানা সম্মাননা. হুমায়ূন আহমেদ এর বই, চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য রচনা দেশের বাইরেও মূল্যায়িত হয়েছে৷ ১৯৪৮ সালের ১৩ই নভেম্বর, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় কুতুবপুরে পীরবংশে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ. কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের বেলভ্যু হাসপাতালে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন. গাজীপুরে তাঁর প্রিয় নুহাশ-পল্লীতে তাঁকে সমাহিত করা হয়. |
Language |
আমার ছেলেবেলা(হার্ডকভার)
ভূমিকাঃ
এক দুপুরে ভাত খেতে বসেছি. আমার মেজো মেয়ে কী-একটা দুষ্টুমি করায় মা’র কাছে বকা খেয়েছে. মুখ অন্ধকার করে ভাতের থালা সামনে নিয়ে বসে আছে. অনেক সাধাসাধি করেও তাকে খাওয়ানো যাচ্ছে না. শেষ পর্যন্ত আমি বললাম, মা, তোমাকে আমি আমার ছেলেবেলার একটা গল্প বলব. গল্প গুনে তুমি যদি হেসে ফেলো তা হলে কিন্তু ভাত খেতে হবে.
আমি গল্প শুরু করলম. সে প্রাণপণ চেষ্টা করতে লাগল না হাসার. শেষ পর্যন্ত খিলখিল করে হেসে ফেলে বলল, তুমি যদি তোমার ছেলেবেলাম আরেকটা গল্প বল তা হলে ভাত খাব.
আমি যে একসময় তাদের মতো ছোট ছিলাম এবং খুব দুষ্ট ছিলাম এই বিস্ময়ই তাদের জন্য ছেলেবেলাটা লিখে ফেললে কেমন হয়. বিশ-পঁচিশ পৃষ্ঠা লিখেও ফেললাম. আমার বড় মেয়ে খুব উৎসাহ নিয়ে পান্ডুলিপি আমার মাকে পড়াল. মা’র মুখ গম্ভীর হয়ে গেল. তিনি শীতল গলায় আমাকে বললেন, এইসব কী লিখেছিস? নিজের আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে রসিকতা?
আমার ছোট বোনও পান্ডুলিপি পড়ল. সে কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, আমাকে নিয়ে মকড়সা প্রসঙ্গে যে গল্পটা লিখেছ ঐটা কেটে দাও. লোকে কী ভাববে? পান্ডুলিপির খবর ছড়িয় পড়ল. আমার ছোটমামা খুলনা থেকে চলে এলেন পড়ার জন্য. তিনি পড়লেন এবং কোনো কথা না বলে খুলনা চলে গেলেন. বুঝলাম তাঁর পছন্দ হয় নি. তবু একসময় শেষ করলাম এবং কোথাও কোনো ভুলটুল আছে কি না তা যাচাই করবার জন্য নিজেই নানিজানকে পড়ে শোনালাম.
নানিজান বললেন, অনেক ভুলভ্রান্তি আছে. এই ধর, তুই লিখলি তোর মা পাগল হয়ে গিয়েছিল. পাগল হবে কীজন্যে? মানুষ চিনত না. উলটাপালটা কথা বলত-এর বেশি তো কিছু না. এটাকে পাগল বলে?
আমি দীর্ঘনিশ্বাস ফেললাম. আমার মেজো মেয়ে বলল, তুমি মন খারাপ করছ কেন? লেখাটা তো মোটামুটি ভালোই হয়েছে. তবে তুমি একটা জিনিস লিখতে ভুলে গেছ.
কোন জিনিস মা?
ছেলেবেলায় দুধ আর ডিম খেতে তোমার কেমন খারাপ লাগত তা তো লেখনি.
দুধ ডিম তো মা তোমরা খাচ্ছ. আমরা খেতে পারিনি. এত পয়সা আমার বাবা-মা’র ছিল না.
মেজো মেয়ে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলল, আহা কী সুখের ছিল তোমাদের ছেলেবেলা!
সেই সুখের খানিকটা ভাগ আজকের পাঠক-পাঠিকাদের দেয়ার জন্যেই এই লেখা. ছেলেবেলা লেখার সময় শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম. যতক্ষণ লিখেছি গভীর আনন্দে হৃদয় আচ্ছন হয়ে ছিল. পেছনে ফিরে তাকানো যে এত আনন্দময় হবে কে জানত?
হুমায়ূন আহমেদ
-
Free worldwide shipping on all orders over 1000 BDT
-
Delivers in: 3-7 Working Days Shipping & Return

You must be logged in to post a review.
Reviews
There are no reviews yet.